ই খতিয়ান বা খতিয়ান (e khatian)

ই খতিয়ান বা  e khatian
ই খতিয়ান বা e khatian

খতিয়ান একটি আইনি ডকুমেন্ট যা একটি জমি বা জমির অংশের মালিকানার তথ্য সংরক্ষণ করে। এটি আধিকারিকভাবে জমির মালিকের নাম, মালিকানা আয়তন, সীমানা, আদালতের নাম, জমির নাম, ও জমির মৌজার নাম সহ বিভিন্ন তথ্য সংযুক্ত করে।

খতিয়ান একটি জমির মালিকানার আইনসঙ্গী দলিল হিসাবে ব্যবহৃত হয়, অন্যান্য সরকারি নিবন্ধসমূহের সাথে এর যোগাযোগ থাকে।

খতিয়ান প্রধানত ভূমি ও মালিকানা সংক্রান্ত বিবরণ উল্লেখ করে। এটি সাধারণত জমির মালিকের ধারণকৃত হয়, তবে অন্যান্য মালিকানা অথবা জমির বর্তমান অধিকারীও এটি অধিকারপ্রাপ্ত করতে পারেন।

সর্বশেষ আপডেট ও সহযোগিতার জন্য WhatsApp যোগ দিন

WhatsApp ChannelJoin WhatsApp
Facebook PageFollow on Facebook

খতিয়ান সম্পর্কিত বিবরণ স্থানীয় সরকারের ভূমি রেকর্ড অথবা জমির মালিকানার মৌজার অফিসের মাধ্যমে উপলব্ধ হতে পারে। বাংলাদেশে, খতিয়ান অফিস জনপ্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় সরকার দুইটি প্রধান স্তরে খতিয়ান প্রদান করে। এটি জমির মালিকানা সংক্রান্ত অতিরিক্ত বিবরণ সরবরাহ করতে পারে, যেমন জমির পরিমাণ, সীমানা, পরিমাণের বিবরণ, ইত্যাদি।

আরো জানুন: অনলাইনে খতিয়ান বের করার নিয়ম | E Khatian Application

ই খতিয়ান (e khatian) বা পর্চা কাকে বলে?

এটি একটি ফারসি শব্দ। জমি চিহ্নিত করার জন্য দলিল। দখল, মালিকানা নির্ধারণ এবং ভূমি উন্নয়ন কর নির্ধারণের উদ্দেশ্যে জরিপের মাধ্যমে প্রস্তুতকৃত নথি খতিয়ান নামে পরিচিত।

এটি রেকর্ড অফ রাইটস, সোটোলিপি বা পোর্চা নামেও পরিচিত। এটি শুধুমাত্র অধিকারের একটি রেকর্ড কিন্তু এটি মালিকানার একটি দলিল নয়। প্রতিটি উপজেলা ছোট ছোট প্লটে বিভক্ত। এই প্লটগুলো মৌজা নামে পরিচিত। মৌজাকে একটি নম্বর দেওয়া হয়। সংখ্যাটি মৌজা নম্বর নামে পরিচিত। এটি জুরিসডিকশন লিস্ট নম্বর নামেও পরিচিত।

মৌজা আবার প্লটে বিভক্ত। এই সংখ্যাটি সাধারণত উত্তর-পশ্চিম বিন্দু থেকে শুরু হয় এবং দক্ষিণ-পূর্ব বিন্দুতে শেষ হয়।

একটি নির্দিষ্ট মালিক বা একাধিক মালিকের একাধিক প্লট থাকতে পারে। আরও সম্পূর্ণ প্লট বা প্লটের অংশের জন্য খতিয়ান খোলা হয়। মৌজা অনুযায়ী শতাধিক খতিয়ান একত্রে আবদ্ধ। তাই খতিয়ানদের ওপর নির্ভর করে সংখ্যায় বাড়তে পারে।

ভূমি উন্নয়ন কর প্রদানের জন্য তহসিল অফিসে একটি পৃথক জোট নম্বরও দেওয়া হয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট eporcha.gov.bd লিখে প্রবেশ করতে হবে।

ই খতিয়ান বিষয়বস্তু;

বিধি, প্রজাস্বত্ব বিধি,
প্লট নং — আংশিক বা সম্পূর্ণ।
নাম, পিতার নাম এবং মালিক বা মালিকদের ঠিকানা।
একজন মালিকের অংশ, মোট জমির পরিমাণ, শ্রেণী এবং জমির প্রকৃতি, অবস্থান, স্বাচ্ছন্দ্যের অধিকার, প্রদেয় ভূমি উন্নয়ন করের পরিমাণ, কর প্রদানের পদ্ধতি, ভাড়াটেদের অধিকার ও বাধ্যবাধকতা, ভাড়ামুক্ত অবস্থা ইত্যাদি।

খতিয়ানের শ্রেণিবিন্যাস:

জরিপ খতিয়ান;
এস এ খতিয়ান;
আরএস খতিয়ান;
বিএস খতিয়ান;
শহর জারীপ;
সিএস খতিয়ান;
মিউটেশন খতিয়ান;
দিয়ারা জারীপ ইত্যাদি

ই খতিয়ান বা  e khatian
ই খতিয়ান বা e khatian

মিউটেশন খতিয়ান:

সাধারণত জরিপের মাধ্যমে খতিয়ান তৈরি করা হয়। কিন্তু জরীপ সব সময় হয় না। সম্পত্তি দুটি জরিপের মধ্যে হস্তান্তর করা যেতে পারে। তাহলে খতিয়ানে মালিকানা পরিবর্তনের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। মিউটেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে করা এই ধরনের কাহতিয়ান মিউটেশন খতিয়ান নামে পরিচিত। এসি ল্যান্ড অফিস এটা করে।

জরিপ/জরীপ খতিয়ান:

জমি জরিপের মাধ্যমে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয়। তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ভূমি রেকর্ড ও জরিপ বিভাগ এই জরিপ পরিচালনা করে। খতিয়ান ছাপার জন্য এর নিজস্ব প্রেস আছে। জরিপের নাম অনুসারে খতিয়ানের নামকরণ করা হয় যেমন সিএস খতিয়ান, আরএস খতিয়ান এসএ খতিয়ান ইত্যাদি

“পর্চা বা জরিপ খতিয়ানের শ্রেণীবিভাগ”

সিএস খতিয়ান:

এই খতিয়ানটি বেঙ্গল টেন্যান্সি অ্যাক্ট ১৮৮৫ -এর অধীনে প্রস্তুত করা হয়েছিল। এটি ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে নামে পরিচিত। এই জরিপটি কক্সবাজার উপজেলার রামু থেকে ১৮৮৮ সালে শুরু হয় এবং শেষ হয় ১৯৪০ সালে।

আরএস খতিয়ান:

সিএস জরিপের ৫০ বছর পর আরেকটি জরিপ অনুষ্ঠিত হয়। এই জরিপটি রিভিশনাল সার্ভে নামে পরিচিত ছিল এবং এই জরিপ থেকে তৈরি খতিয়ান আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। এই জরিপের উদ্দেশ্য হল জমির পরিমাণ, মালিকের নাম এবং মালিকের নাম আপডেট করা। এটি সিএস খতিয়ানের চেয়েও বেশি খাঁটি।

এসএ খতিয়ান:

এই খতিয়ানটি রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন 1950-এর অধীনে তৈরি করা হয়েছিল। আসলে, এটি কোনও ব্যবহারিক জরিপ নয় বা এটি কোনও মাঠ জরিপের ভিত্তিতে নয়। জমিদার বা জমিদারের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই খতিয়ান করা হতো।

এসএ খতিয়ান মানে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ খতিয়ান বা সেটেলমেন্ট অ্যাটেস্টেশন। এটি পিএস খতিয়ান বা পাকিস্তান সার্ভে খতিয়ান নামেও পরিচিত। এটি কোনো খাঁটি খতিয়ান নয়।

বিএস খতিয়ান :

এটি অন্য সব খতিয়ানের চেয়ে বেশি খাঁটি খতিয়ান। 1970 সালে একটি জরিপ শুরু হয়েছিল যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। এই জরিপটি বাংলাদেশ জরিপ নামে পরিচিত এবং বিএস জরিপ থেকে তৈরি খতিয়ান বিএস খতিয়ান বা বাংলাদেশ জরিপ খতিয়ান নামে পরিচিত।

খতিয়ান ও জমির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ মূল্যায়ন:

১ শতাংশ =৪৩৫.৬ বর্গফুট ৬৫.৪৫ বর্গ ইঞ্চি;
১ শতাংশ = ১০০ অযুতাংশ;
৫ শতাংশ = ৩ কাঠা। = ১৩০৬.৮ বর্গফুট;
১০ শতাংশ = ৬ কাঠা। = ৪৩৫৬ বর্গফুট;

১ কাঠা = ৭২০ বর্গফুট;
১ কাঠা = ৮০ বর্গগজ;
১ কাঠা = ১.৬৫ শতাংশ;
১ কাঠা = ১৬ ছটাক;
২০ কাঠা = ১ বিঘা;
৬০.৫ কাঠা = ১ একর;

১ বিঘা = ১৪,৪০০ বর্গফুট;
১ বিঘা = ১৬০০ বর্গগজ;
১ বিঘা = ২০ কাঠা;
১ বিঘা = ৩৩ শতাংশ;

১ একর = ১০০ শতাংশ;
১ একর = ৩ বিঘা ৮ ছটাক;
১ একর = ৬০.৫ কাঠা;
১ অযুতাংশ = ৪ বর্গফুট ৫২.৩৬ বর্গ ইঞ্চি;
১ ছটাক = ৪৫ বর্গফুট।

চট্টগ্রামের (Chittagong)অধিবাসীদের জন্য নিচের হিসাবটা উপযোগী।

১ গন্ডা = ৮৭১ বর্গফুট।
১ গন্ডা = ২ শতাংশ।
১ গন্ডা = ১.২১ কাঠা।
২০ গন্ডা = ১ কানি ।

১ কানি = ১৬,৯৯০ বর্গফুট।
১ কানি = ৩৯ শতাংশ।
১ কানি = ২৩.৫ কাঠা।
১ কানি = ২০ গন্ডা।

কানিঃ


কানি দুই প্রকার। যথা- (ক) কাচ্চা কানি (খ) সাই কানি
কাচ্চা কানিঃ
৪০ শতকে এক বাচ্চা কানি। কাচ্চা কানি ৪০ শতকে হয় বলে একে ৪০ শতকের কানিও বলা হয়।

সাই কানিঃ
এই কানি কোথাও ১২০ শতকে ধরা হয়। আবার কোথাও কোথাও ১৬০ শতকেও ধরা হয়।
কানি গন্ডার সাথে বিভিন্ন প্রকারের পরিমাপের তুলনা:


২ কানি ১০ গন্ডা (৪০ শতকের কানিতে) = ১ একর
১ কানি = ১৭২৮০ বর্গফুট
১ কানি = ১৯৩৬ বর্গগজ
১ কানি = ১৬১৯ বর্গমিটার
১ বিঘা = ২০ কাঠা
১ কাঠা = ১৬ ছটাক
১ ছটাক = ২০ গন্ডা
১ কানি = ৪০ বর্গ লিঙ্ক
১ একর = ১০ বর্গ চেইন
১ একর = ১০০ শতক
১ একর = ৪,০৪৭ বর্গমিটার
১ একর = ৩ বিঘা ৮ ছটাক
১ একর = ৬০.৫ কাঠা
১ শতক = ১ গন্ডা বা ৪৩২.৬ বর্গফুট
বিঘা-কাঠার হিসাব
১ বিঘা = (৮০ হাত×৮০ হাত) ৬৪০০ বর্গহাত

ই খতিয়ান বা  e khatian
ই খতিয়ান বা e khatian

বিভিন্ন ধরনের খতিয়ান কিভাবে চিহ্নিত করা যায়:


আরএস খতিয়ান:

  1. উল্লম্ব এবং এটি দুটি পৃষ্ঠা আছে;
  2. এই খতিয়ানের প্রথম পৃষ্ঠার উপরে জেলার নাম, মৌজা এবং বেশ কিছু খতিয়ান লেখা আছে;
  3. “ধারা ১০৫/১০৬/১০৮/১০৯ অনুযায়ী” এটি প্রথম পৃষ্ঠার নীচে লেখা আছে;
  4. “উত্তর সীমান্তের অধিকারী” দ্বিতীয় পৃষ্ঠার দ্বিতীয় কলাম;
  5. মালিকদের বিভিন্ন গ্রুপে উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই গোষ্ঠীগুলিকে বাংলা বর্ণমালা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে।

পিএস খতিয়ান:

  1. উল্লম্ব এবং এটি দুটি পৃষ্ঠা আছে;
  2. এই খতিয়ানের প্রথম পাতার উপরে জেলার নাম, মৌজা এবং খতিয়ানের সংখ্যা লেখা আছে। এছাড়া আরএস খতিয়ানের নম্বর পিএস খতিয়ান নম্বরের উপরে উল্লেখ আছে। “ধারা ৪৯/৫০/৫১/৫২ বা ৫৩ অনুযায়ী” প্রথম পৃষ্ঠার নীচে লেখা আছে।

বিএস খতিয়ান:

  1. অনুভূমিক এবং এটি একটি পৃষ্ঠা আছে;
  2. এই খতিয়ানের প্রথম পৃষ্ঠায় সমস্ত কলাম উল্লেখ করা হয়েছে।

আরো জানুন: খতিয়ান ডাউনলোড

অনলাইনে এখন থেকে খতিয়ানের কিউ আর কোড সম্বলিত অনলাইন/তাৎক্ষনিক কপি ১০০ টাকার বিনিময়ে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়াও সার্টিফাইড/সত্যায়িত খতিয়ান কপির মূল্য পুন:নির্ধারণ করে ১০০ টাকা করা হয়েছে।

জরিপ খতিয়ান;
এস এ খতিয়ান;
আরএস খতিয়ান;
বিএস খতিয়ান;
শহর জরিপ ;
সিএস খতিয়ান;
মিউটেশন খতিয়ান;
দিয়ারা জারীপ ইত্যাদি

  • এনআইডি কার্ড নম্বর।
  • জন্ম তারিখ।
  • খতিয়ান বা দাগ নম্বর
  • ফোন নম্বর
  • খতিয়ান কপির মূল্য ১০০ টাকা ।

ধাপ ১: eporcha.gov.bd এই ঠিকানায় প্রবেশ।

আপনি যদি জমির খতিয়ান বা পর্চা অনলাইনে বের করতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমে যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করে নিতে হবে। আর সেখানে গিয়ে আপনাকে bangladesh gov bd ভূমি মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট eporcha.gov.bd লিখে প্রবেশ করতে হবে।

3 thoughts on “ই খতিয়ান বা খতিয়ান (e khatian)”

Leave a Comment