আসসালামু আলাইকুম। আজকে আমরা আলোচনা করব পর্তুগাল ভিসা নিয়ে। পর্তুগাল দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের একটি দেশ। এটি সেনজন ভুক্ত একটি দেশ। পর্তুগাল এর আয়তন ৯২,৩৫৫ বর্গকিলোমিটার। পর্তুগাল এর জনসংখ্যা প্রায় ১১ কোটি এর মতো। আজকে আমরা পর্তুগাল ভিসা ও অভিবাসন নিয়ে আলোচনা করব। এখানে গেলে আমাদের কি কি সুবিধা আর অসুবিধার সম্মুখীন হতে হবে সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
পর্তুগাল এ কোন কোন ভিসায় যাওয়া যায়:
- জব ভিসা
- স্টুডের্ট ভিসা
- ভিজিট ভিসা
- জব সিকার ভিসা
জব পর্তুগাল ভিসায় যাওয়ার উপায়:
পর্তুগালে যদি আপনি জব ভিসায় যেতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে একটা অফার লেটার সবার প্রথম সংগ্রহ করতে হবে। আপনি চাইলে অনলাইনে নিজে নিজে এপ্লাই করে অফার লেটার সংগ্রহ করতে পারেন অথবা কোন এজেন্সির সহায়তা নিতে পারেন । আপনি যদি অনলাইনে নিজে নিজে অ্যাপ্লাই করে অফার লেটার সংগ্রহ করতে পারেন তাহলে খুব কম খরচে আপনি পর্তুগাল যেতে পারবেন।
যদি এজেন্সির মাধ্যমে যেতে চান তাহলে এজেন্সি আপনার থেকে এক এক ধরনের টাকা চার্জ করবে । কেউ 10 থেকে 15 লক্ষ টাকা কেউবা তার চাইতেও বেশি চার্জ করতে পারে। যদি নিজে নিজে এপ্লাই করে যেতে পারেন তাহলে আপনি চার পাঁচ লাখ টাকার কম খরচে যেতে পারবেন।
স্টুডের্ট ভিসায় যাওয়ার উপায়:
যারা বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে চায় তাদের পছন্দের একটি দেশ হচ্ছে পর্তুগাল। পড়তে গেলে খুব সহজেই আপনি স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে পারবেন। স্টুডেন্ট ভিসা চাইলে নিজে নিজে প্রসেস করা যায় চাইলে এজেন্সি এর মাধ্যমে প্রসেস করা যায়। প্রথমে আপনাকে বিভিন্ন কলেজে এপ্লাই করতে হবে। সেখান থেকে যদি আপনার লেটার একসেপ্ট করা হয় তাহলে তাদেরকে টিউশন ফি দিতে হবে।
পরবর্তীতে ভিসা এপ্লাই করে আপনাকে সেখানে যেতে হবে। আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে চান সে ক্ষেত্রে আপনার মেইন খরচটা হবে টিউশন ফি পে করার ক্ষেত্রে । এক এক কলেজে এক এক ধরনের টিউশন ফি। আপনি এপ্লাই করার আগে সেই কলেজের পোর্টালগুলো চেক করে নেবেন। আপনি যে বিষয়ে পড়তে চান সেই বিষয়ে টিউশন ফি কত ।
ভিজিট ভিসায় যাওয়ার উপায়:
পর্তুগাল ইউরোপের খুবই সুন্দর একটি দেশ। পর্তুগালের অর্থনীতির বড় একটা অংশ ডিপেন্ড করে ভিজিট এর উপর। তাদের দেশে পুরো পৃথিবী থেকে অনেক মানুষ ভিজিট করতে চায়।মূলত এই খাতেই তাদের প্রচুর পরিমাণ কর্মী নিয়ে থাকে। আপনি যদি পর্তুগাল ঘুরতে যেতে চান সেক্ষেত্রে আপনি ভিজিট ভিসা নিয়ে পর্তুগাল যেতে পারবেন।
জব সিকার ভিসায় যাওয়ার উপায়:
জব সিকার ভিসা বলতে বোঝায় জব খোঁজার ভিসা। আপনি এই বিষয়ে সরাসরি পর্তুগাল গিয়ে সেখানে জব খুঁজতে পারবেন। জব ভিসায় পর্তুগাল যাওয়ার চাইতে জপ সিকার ভিসায় যাওয়ার খরচ অনেক কম। আপনি যদি সেখানে গিয়ে জব পান সে ক্ষেত্রে আপনি সেখানে থাকতে পারবেন এবং আপনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে পারবেন।
পর্তুগাল আমাদের কেন যাওয়া উচিত:
প্রথমত পর্তুগাল হচ্ছে ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত একটি দেশ। বাংলাদেশ থেকে যারা যায় তাদের উদ্দেশ্য থাকে সেখানে স্থায়ী হওয়া। ইউরোপের যতগুলো দেশ রয়েছে সবগুলো দেশের মধ্যে সবচেয়ে সহজে স্থায়ী হওয়া যায় পর্তুগালে। পর্তুগালে আপনি কয়েক বছর থাকলে খুব সহজেই কাগজপত্র করে নিতে পারবেন।
ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোতে পাসপোর্ট করার জন্য প্রচুর হেসেল করাতে হয়। কিন্তু পর্তুগালে সেটা সহজেই পাওয়া যায়। আপনি পাঁচ বছর যদি পর্তুগালে থাকেন খুব সহজে আপনি সেখান থেকে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি পেয়ে যাবেন। মূলত সহজে কাগজপত্র পাওয়ার কারণে সবাই পর্তুগালকে তাদের লিস্টের প্রথম দিকে রাখে।
পর্তুগাল কেন যাওয়া উচিৎ নয়:
পর্তুগালের অর্থনীতি ইউরোপের অনেক দেশের চাইতে তুলনামূলক খারাপ। যেহেতু সহজেই কাগজপত্র পাওয়া যায় তাই অনেক মানুষ পর্তুগাল গিয়েছে। পর্তুগালের শহরের দিকে বাসা পাওয়া অনেকটা সোনার হরিণ পাওয়ার চাইতেও কঠিন। পর্তুগালের শহরে খুব একটা কাজও পাওয়া যায় না। কাজের তুলনায় যেহেতু অনেক মানুষ সেখানে চলে গেছে তাই কাজের চাহিদা কম।
পর্তুগালে যদি আপনি একটি শহরে বাসা নিয়ে থাকতে চান। তাহলে আপনি যত টাকা ইনকাম করবেন তার আরো অনেকটাই চলে যাবে বাসা ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে। তাছাড়াও যে সময় পর্যটক কম থাকে সে সময় এখানে মোটামুটি কাজ পাওয়া যায় না বললেই চলে। পর্তুগালে ভাষা শেখার ক্ষেত্রেও আপনাকে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে।
আশা করি পর্তুগালের সকল বিষয়গুলো আপনারা সহজে বুঝতে পারছেন। আপনি যদি পর্তুগাল যেতে চান এই বিষয় গুলো মাথায় রেখে যাবেন। ধন্যবাদ