পৃথিবীর অন্যতম ধনী এবং শান্তিপ্রিয় দেশ হচ্ছে কানাডা। পুরো পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের পছন্দের দেশের মধ্যে একটি দেশ আছে কানাডা। যারা অভিবাসন প্রত্যাশী রয়েছে তাদের অনেকেরই পছন্দের ডেস্টিনেশন কানাডা হয়ে থাকে। কানাডা যেমনি ধনী এবং শান্তিপ্রিয় একটি দেশ তেমনি খুব সুন্দর একটি দেশ। তাই ভ্রমণ পিপাসু মানুষের কাছে কানাডা পছন্দের তালিকায় থাকে। আজকে আমরা কানাডার ভিসিট ভিসা এবং অভিবাসন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
কানাডার ভিজিট ভিসার খরচ।
বাংলাদেশ থেকে যারা কানাডা ভিজিট করতে চায় তাদের বেশিরভাগ মানুষেরই এক একটি ভিসার জন্য লাখ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। আপনারা বিশ্বাস নাও করতে পারেন বাট অরিজিনালি কালারটা একটি ভিজিট ভিসার খরচ কত সরকারিভাবে সেটা জানলে অবাক হবেন। আপনি যদি কানাডার একটু ভিজিট ভিসা পেতে চান তাহলে আপনার দুইটি ভাবে খরচ করতে হবে।
আপনার প্রথম খরচটা হবে বায়োমেট্রিকের জন্য যা প্রায় 80 থেকে 85 কানাডিয়ান ডলার। বাংলাদেশের টাকায় এর মূল্য প্রায় সাত হাজার টাকার মত। এরপর আরো একটি খরচ আপনার হবে এম্বাসি ফ্রি এর জন্য। এখানে আপনাকে ১০০ কানাডিয়ান ডলার খরচ করতে হবে। এর মূল্যবান সর্বোচ্চ ৯০০০ টাকার মত হবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি কানাডার ভিজিট ভিসার জন্য আমাদের টোটাল খরচ হচ্ছে ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা।
কানাডার ভিজিট ভিসা পেতে কি কি লাগবে।
পৃথিবীতে উন্নত জীবনমানের যতগুলো দেশ দেশ রয়েছে কানাডা তার মধ্যে অন্যতম । এখানে চলাফেরা এবং থাকা খাওয়া সব কিছুর জন্য অনেক টাকা খরচ করতে হয়। এছাড়াও যদি কারো কাছে অনেক টাকা না থাকে সেই কানাডা ভিজিট করতে পারেনা। কখনোই কোন মানুষ প্রথম অবস্থায় কানাডা ভিজিট করে না। আপনি যদি কানাডার একটি ভিজিট ভিসা পেতে চান প্রথমে আপনাকে, আপনি যে একজন রিয়েল ভিজিটর সেটা কালারের ইউনিভাসিটিতে প্রমাণ করতে হবে।
এর জন্য আপনি এর আগে কোন কোন দেশ ভিজিট করেছেন সেটা আপনার পাসপোর্টে থাকতে হবে। পরবর্তীতে আপনার বিশাল এমাউন্টের একটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে। আপনি কোন দেশ ভিজিট না করেও কানাডা এর ভিজিট ভিসা পেতে পারেন যদি আপনার কোন আত্মীয় কানাডাতে থাকে। আপনি তাদের সাথে দেখা করার জন্য কানাডায় যাচ্ছেন এরকম কিছু প্রমাণ করতে পারেন।
দালালরা কানাডার ভিসার জন্য অনেক টাকা নেয় কেন।
আমরা প্রথমেই কানাডার একটি ভিসার জন্য কি পরিমান খরচ হতে পারে সেটা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি ভিসার জন্য আমাদের সরকারিভাবে 16 থেকে 17 হাজার টাকার মতো খরচ হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে দালালরা কেন কয়েক লক্ষ টাকা আমাদের থেকে নেয়। প্রথমত তারা প্রফেশনালি কাজটি করে দিতে পারে কারণ এটা তাদের পেশা এবং এই বিষয়ে তারা অনেক অভিজ্ঞ। দ্বিতীয়তঃ আপনার যদি কোন ডকুমেন্টের ঘাটতি থাকে সেটা তারা পূরণ করে দিতে পারবে। মনে করেন আপনি এর আগে কোন দেশ ভিজিট করেননি।
দালালরা আপনার পাসপোর্টে ফেক ভিজিট এর ভিসার লোগো লাগিয়ে দেবে। সত্যি কথা বলতে তারা এটা করতে পারবে কারণ তাদের এটা পেশা এবং তাদের এই বিষয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। তারা খুব ভালো করে জানে কোন কোন দেশ ভিজিট করলে আপনি সহজে কানাডার ভিজিট ভিসা পেতে পারেন সেই দেশগুলোর ভিজিট ভিসার স্টাইল পার্টনার পাসপোর্টে লাগিয়ে দেবে তারা।
মোট কথা হচ্ছে আপনার একটা ফেক ভিজিট হিস্টোরি তারা তৈরি করে দেবে। এছাড়াও আপনার ব্যাংক স্টেটমেন্টে যদি পর্যাপ্ত টাকা না থাকে সেক্ষেত্রেও তারা সাপোর্ট করবে আপনার ফেক ব্যাক লিস্ট অথবা ডুবলিকেট স্টেটমেন্ট তৈরি করে তারা দেবে অথবা আপনার ব্যাংকে একাউন্ট তৈরি করে সেখানে টাকা জমা করিয়ে দেবে। এভাবে বিভিন্নভাবে আপনাকে তারা সাপোর্ট করবে যার জন্য তারা অতিরিক্ত মোটা হতে অংকের টাকা আপনার থেকে নিবে।
কানাডায় ভিজিট ভিসায় গিয়ে কি থাকা যায়।
আপনি যদি মনে করে থাকেন আপনি কানাডায় ভিজিট বিষয়ে যাবেন এবং সেখানে অবৈধভাবে বসবাস করবেন তাহলে এই চিন্তা-ভাবনা মাথা থেকে দূর করে ফেলুন। কখনোই আপনি এরকম চিন্তা ভাবনা মাথায় নিয়ে সেখানে যাবেন না। তাহলে কথা হচ্ছে আমরা ভিজিট ভিসায় গিয়ে কিভাবে সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করবো। আপনি যদি ভিজিট ভিসায় কানাডায় যান সেখানে গিয়ে আপনি জব করতে পারবেন।
সরকারি এপ্রুভেট অর্থাৎ লিমা এপ্রুভেট জবগুলো যদি আপনি খুঁজে পান সে ক্ষেত্রে আপনি সেখানে থাকার জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু আপনি অবৈধভাবে সেখানে থাকতে পারবেন না কারণ সেখানে প্রত্যেকটা প্রসেসের জন্য কোন না কোন ভাবে আপনাকে সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে দ্বারস্ত হতে হবে। তাই আপনি যদি সেখানে অবৈধভাবে থাকার কথা ভেবে থাকেন তাহলে সেটা ভুল হবে। আপনি সেখানে ভিজিট ভিসায় যাবেন এবং ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে সেখান থেকে ফিরে আসবেন এরকম চিন্তা ভাবনা নিয়ে আপনি সেখানে যাবেন।
যদি আপনি সেখানে জব খুঁজে পান এবং সেখানে আপনার কানাডার ভিজিট ভিসার মেয়াদ বাড়াতে পারেন সেখানেই স্থায়ীভাবে থাকতে পারেন সেটা হবে আপনার জন্য বোনাস। এটা যে আপনার ক্ষেত্রে হবেই এরকম কোন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না। দিন দিন এইসব দেশগুলোতে অভিবাসন প্রত্যাশীদের যেই নিয়ম রয়েছে সেগুলো কঠোর হচ্ছে কারণ সেখানে মানুষ অবৈধভাবে থাকার প্রবণতা বেশি দেখাচ্ছে।
কানাডা কেন ভিসা কম দিচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে মানুষ লাখ লাখ টাকা ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখিয়ে কানাডায় যাচ্ছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো সেখানে গিয়ে তারা নিজেদেরকে দেউলিয়া ঘোষণা করতেছে এবং সেখানে থাকতে চাচ্ছে। তারা অসহায় প্রমাণ করে কানাডা সরকারের কাছে আশ্রয় যাচ্ছে। দিন দিন এরকম সংরক্ষা অনেক বৃদ্ধি পায়খানাটা সরকার বর্তমানে খুব একটা দিচ্ছেনা। এটা দুশমন তো আমাদেরই সেখানে গিয়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে থাকতে চাচ্ছি।
আশা করছি এই পোস্ট পরে আপনি কানাডার ভিসিট ভিসা এবং ভিজিট ভিসার পর সেখানে গিয়ে কিভাবে স্থায়ীভাবে থাকা যায় এই বিষয়গুলো বুঝতে পারছেন। এই বিষয়ে আপনার মতামত আপনি কমেন্টে জানাতে পারেন। আপনার যদি অতিরিক্ত কোন প্রশ্ন থাকে সেটাও আমাদেরকে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ সবাইকে পোস্ট করার জন্য ভালো থাকবেন সবাই।
FAQ’S
প্রশ্নোত্তর ১:
প্রশ্ন: কানাডা কেন ভ্রমণকারীদের পছন্দের দেশ হিসেবে পরিচিত?
উত্তর: কানাডা তার ধনী ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং উন্নত জীবনমানের জন্য ভ্রমণকারীদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে। ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের জন্য কানাডার বৈচিত্র্যময় প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং বিভিন্ন পর্যটন আকর্ষণ বিশেষ আকর্ষণীয়।
প্রশ্নোত্তর ২:
প্রশ্ন: কানাডার ভিজিট ভিসার মোট খরচ কত এবং তা কীভাবে বিভক্ত হয়?
উত্তর: কানাডার ভিজিট ভিসার মোট খরচ প্রায় ১৬,০০০-১৭,০০০ টাকা। এই খরচ দুটি প্রধান অংশে বিভক্ত: বায়োমেট্রিক ফি (৮০-৮৫ কানাডিয়ান ডলার বা প্রায় ৭,০০০ টাকা) এবং এম্বাসি ফি (১০০ কানাডিয়ান ডলার বা প্রায় ৯,০০০ টাকা)।
প্রশ্নোত্তর ৩:
প্রশ্ন: কানাডার ভিজিট ভিসা পেতে কোন কোন ডকুমেন্ট দরকার হয়?
উত্তর: কানাডার ভিজিট ভিসা পেতে আগের ভ্রমণের রেকর্ড, একটি বড় এমাউন্টের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, এবং যদি কানাডায় কোনো আত্মীয় থাকে তবে তাদের সাথে সাক্ষাতের প্রমাণ লাগবে।
প্রশ্নোত্তর ৪:
প্রশ্ন: দালালদের মাধ্যমে কানাডার ভিসার খরচ কেন বেশি হয়?
উত্তর: দালালরা প্রফেশনাল সার্ভিস দেয় এবং ভিসা প্রসেসিংয়ে অভিজ্ঞতা থাকে। তারা ফেক ভিজিট হিস্টোরি তৈরি করা এবং ব্যাংক স্টেটমেন্টে ঘাটতি পূরণ করার মতো সুবিধা দেয়, যা অতিরিক্ত খরচ বাড়ায়।
প্রশ্নোত্তর ৫:
প্রশ্ন: ভিজিট ভিসায় কানাডায় গিয়ে স্থায়ীভাবে থাকা কি সম্ভব?
উত্তর: ভিজিট ভিসায় গিয়ে অবৈধভাবে বসবাস করা উচিত নয়। তবে, বৈধভাবে থাকার জন্য জব খুঁজে নিতে হবে এবং সরকারি অনুমোদন পেতে হবে। ভিজিট ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে দেশে ফিরে আসতে হবে যদি বৈধভাবে থাকার কোনো উপায় না পাওয়া যায়।
প্রশ্নোত্তর ৬:
প্রশ্ন: কেন কানাডা বাংলাদেশ থেকে কম ভিসা দিচ্ছে?
উত্তর: অনেক বাংলাদেশী ভিসা নিয়ে কানাডায় গিয়ে নিজেদেরকে দেউলিয়া ঘোষণা করে অবৈধভাবে থাকার চেষ্টা করে। এর ফলে কানাডা সরকার ভিসা প্রদান কঠোর করছে।
প্রশ্নোত্তর ৭:
প্রশ্ন: একটি ভিজিট ভিসা পেতে কোন কোন দেশগুলোর ভিজিট হিস্টোরি সহায়ক হতে পারে?
উত্তর: দালালরা প্রায়ই এমন দেশগুলোর ভিজিট হিস্টোরি তৈরি করে দেয় যেগুলো কানাডার ভিজিট ভিসা পেতে সহায়ক হতে পারে। সাধারণত উন্নত এবং নিরাপদ দেশগুলোর ভিজিট হিস্টোরি বেশি কার্যকর।
প্রশ্নোত্তর ৮:
প্রশ্ন: কোন পরিস্থিতিতে দালালদের সাহায্য নেয়া উচিত নয়?
উত্তর: ফেক ডকুমেন্ট তৈরি করার জন্য দালালদের সাহায্য নেয়া উচিত নয়, কারণ এটি অবৈধ এবং ধরা পড়লে কঠিন পরিণতি হতে পারে।
প্রশ্নোত্তর ৯:
প্রশ্ন: ভিজিট ভিসায় গেলে কীভাবে বৈধভাবে থাকার সুযোগ পাওয়া যায়?
উত্তর: কানাডায় ভিজিট ভিসায় গেলে বৈধভাবে থাকার জন্য সরকার অনুমোদিত জব খুঁজে নিতে হবে এবং লিমা অনুমোদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।
প্রশ্নোত্তর ১০:
প্রশ্ন: কানাডায় অবৈধভাবে বসবাসের জন্য কী কী ঝুঁকি রয়েছে?
উত্তর: অবৈধভাবে বসবাসের ফলে ধরা পড়লে দেশে ফেরত পাঠানো হতে পারে এবং ভবিষ্যতে কানাডায় প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হতে পারে। এছাড়া, অবৈধ অবস্থানের কারণে স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
Leave a Comment