এনআইডি কার্ডে নামে ভুল আছে? জানুন ভোটার NID Name Correction করতে কি কি লাগে এবং সংশোধন আবেদন করার নিয়ম।
NID কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র নামে ভুল এটি একটি সাধারণ সমস্যা। সচেতনতার অভাবে বা কম্পিউটারে ডাটা এন্ট্রির ভুলের কারণে অনেক নাগরিকেরই ভোটার আইডি কার্ডের নামে ভুল হয়ে থাকে। যায় জন্য বেশ অনেক জায়গায় সমস্যায় পড়তে হয়।
আজকের পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করবো কিভাবে আপনার ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করবেন এবং এজন্য কি কি ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র লাগবে।
জাতীয় পরিচয় পত্রে নাম সংশোধন (nid application system) করার জন্য উপযুক্ত প্রমাণপত্র আপলোড করে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। ভোটার আইডি কার্ডের ভিন্ন ভিন্ন তথ্য সংশোধনের ভিন্ন ভিন্ন কাগজপত্র প্রয়োজন হয়। আজকে জানাবো নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে।
সর্বশেষ আপডেট ও সমস্যার সমাধান এবং পরামর্শ জানতে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়াতে যুক্ত থাকুন।
ভোটার আইডি কার্ড বা NID Name Correction করতে কি কি লাগে
- জন্ম নিবন্ধন সনদ;
- পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স;
- এমপিও সিট/সার্ভিস বহি;
- শিক্ষাগত সনদ;
- বিবাহের কাবিন নামা;
- সন্তানদের পাবলিক পরীক্ষার সনদ অথবা এনআইডি কার্ডের কপি;
- ভাই-বোনের জাতীয় পরিচয় পত্র।
নাম সংশোধন করার নিয়ম, ধরণ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
সংশোধনের ধরণ | প্রয়োজনীয় কাগজপত্র |
---|---|
বাংলা অনুসারে ইংরেজি নাম ইংরেজি অনুসারে বাংলা নাম, | বিদ্যমান জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি |
নিজ নামের বানান সংশোধন, নামের আংশিক পরিবর্তন | জন্ম নিবন্ধন; পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স; শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ; সন্তানদের পাবলিক পরীক্ষার সনদ বা জাতীয় পরিচয় পত্র; এমপিও সিট/সার্ভিস বহি। |
সম্পূর্ণ নাম পরিবর্তন | শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ; আইডি কার্ড করার পূর্বের জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স; সন্তানদের পাবলিক পরীক্ষার সনদ অথবা জাতীয় পরিচয় পত্র; স্ত্রীর জাতীয় পরিচয় পত্রের কপি; আবেদনকারী একই ব্যক্তি এই মর্মে উপজেলা নির্বাচন অফিসারের প্রত্যয়ন (অবশ্যই) |
পিতা-মাতার নাম সংশোধন | আইডি কার্ড করার পূর্বের জন্ম নিবন্ধন, পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স; শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ; পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্র; ভাই-বোনের জাতীয় পরিচয় পত্র। |
আইডি কার্ড সংশোধন করতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সম্পর্কে জানতে দেখুন- ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে।
ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করার নিয়ম
NID কার্ডের নাম সংশোধন করার জন্য services.nidw.gov.bd সাইটে ভিজিট করে একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন। এরপর প্রোফাইলের এডিট অপশনে গিয়ে নাম সংশোধন করুন। সংশোধন ফি জমা দিয়ে আবেদনটি সাবমিট করুন।
ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন (NID Name Correction) করার জন্য নিচের সহজ কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করুন;
- জাতীয় পরিচয় পত্রের ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd ভিজিট করুন;
- এখানে NID নম্বর, জন্মতারিখ ও ঠিকানা দিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন;
- লগইন করে প্রোফাইল অপশনে যান এবং এডিট অপশনে ক্লিক করুন;
- নামের উপর Checkbox ক্লিক করে সঠিক নাম লিখুন;
- পরবর্তী ধাপে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন (nid correction) ফি জমা দিন;
- সবশেষে সংশোধিত তথ্যের প্রমাণ হিসেবে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট আপলোড করে আবেদন সাবমিট করবেন।
নাম সংশোধন আবেদনটি নির্বাচন কমিশনে জমা হবে। আবেদনটির তথ্য যাচাই বাছাই করে অনুমোদন করা হবে। আবেদন অনুমোদন হলে বা অন্য কোন কাগজপত্র প্রয়োজন থাকলে মোবাইলে SMS এর মাধ্যমে জানানো হবে।
আবেদনটি সফলভাবে অনুমোদন হলে, অনলাইনে আপনার সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।
ধাপ ১: প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান/ ছবি তুলে নিন
জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম সংশোধন nid bd আবেদন করার আগে আপনার উচিত প্রয়োজনীয় প্রমাণগুলো স্ক্যান করে নির্দিষ্ট সাইজের মধ্যে Crop করে নেয়া। স্ক্যান করতে না পারলে, কোন টেবিলের উপর রেখে উপর থেকে ছবি তুলে নিন।
ধাপ ২: এনআইডি (services nidw gov bd) ওয়েবসাইটে রেজিষ্ট্রেশন করুন
যদি জাতীয় পরিচয়পত্রের সাইটে রেজিস্ট্রেশন করা থাকে সরাসরি NID নম্বর ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন। রেজিস্ট্রেশন করা না থাকলে আগে রেজিস্টার অপশন থেকে এনআইডি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করুন।
ধাপ ৩: এডিট করে নাম সংশোধন করুন
জাতীয় পরিচয় পত্রের (nid service) একাউন্টে লগইন করার পর প্রোফাইল অপশনে যান। এখানে ৩ ধরণের তথ্য রয়েছে, ব্যক্তিগত তথ্য, অন্যান্য তথ্য ও ঠিকানা। নাম আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, তাই ব্যক্তিগত তথ্য ট্যাব থেকে উপরের ডান পাশ থেকে এডিট বাটনে ক্লিক করুন এবং বহাল ক্লিক করুন।
ধাপ ৪: জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন ফি পরিশোধ করুন
এখন, আপনাকে আপনার ভুল তথ্যের ধরণ অনুযায়ী fee প্রদান করতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার কম্পিউটার বা মোবাইলের এতক্ষণ যা করেছেন তা ক্লোজ করবেন না। ফি প্রদান করেই আপনাকে আবার আবেদনের বাকি কাজ শেষ করতে হবে।
বিকাশের মাধ্যমে ফি দিতে বিকাশ এ্যাপ থেকে আপনার বিকাশ একাউন্টে লগইন করুন। এবং নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।
- পে বিল অপশনে যান
- সরকারি ফি অপশনে ক্লিক করুন এবং NID Service অপশনটি বাছাই করুন।
- আপনার NID নম্বরটি ইংরেজিতে লিখুন
- আপনার আবেদনের ধরণ বাছাই করুন।
- আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নম্বর দিয়ে ফি পরিশোধ করুন।
ফি পরিশোধ করা হলে আপনি NID ওয়েবসাইটে আবার ফিরে জান এবং প্রমাণপত্রসমূহ আপলোড করে আবেদনটি সাবমিট করুন।
প্রক্রিয়া ধাপে ধাপে অনুসরণ করুন ।
ধাপ ৫: ডকুমেন্ট আপলোড ও আবেদন সাবমিট
আপনাকে ১ম ধাপেই প্রয়োজনীয় (nid verification) ডকুমেন্ট গুলো স্ক্যান বা ছবি তুলে একটি ফোল্ডারে রাখার জন্য বলেছিলাম। এখন প্রয়োজন মোতাবেক আপনার ডকুমেন্ট গুলো আপলোড করে আবেদন সাবমিট করতে পারবেন।
ধাপ ৬: ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন ফরম ডাউনলোড
আবেদন সাবমিট করার পর, ড্যাশবোর্ডে ফিরে আসুন। উপরের দিকে আবেদনটি ডাউনলোড করার একটি লিংক দেখতে পাবেন। লিংকে ক্লিক করে জাতীয় পরিচয় পত্র নাম সংশোধন ফরমটি ডাউনলোড করে নিজের কাছে রাখুন। ফরমটি উপজেলা নির্বাচন অফিসে জমা দেয়ার প্রয়োজন হবে না।
ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধনে যা মনে রাখতে হবে
- জাতীয় পরিচয় পত্র বা NID Card এর নাম সংশোধনের জন্য অবশ্যই আপনাকে উপযুক্ত প্রমাণ সাবমিট করে আবেদন করতে হবে।
- নাম সংশোধনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণপত্র হচ্ছে এসএসসি, এইচএসসি বা তার উর্দ্ধের যে কোন পাবলিক পরীক্ষার সনদ। এগুলো না থাকলে, পিইসিই ও জেএসসি পরীক্ষার সনদও গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
- পাবলিক পরীক্ষার সনদের পাশাপাশি, অনলাইন বা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ বিবেচনা করা হয়। এই ২টি ডকুমেন্ট ঠিক থাকলে আপনি কোন সমস্যা ছাড়াই NID নাম সংশোধন করতে পারবেন।
- শিক্ষা সনদ বা জন্ম নিবন্ধন কোন একটি না থাকলে তার পরিবর্তে অন্যান্য কাগজপত্র যেমন, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, বিবাহ নিকাহনামা, সন্তানদের আইডি কার্ড এগুলো বিবেচনা করা হবে।
- জন্ম নিবন্ধন সনদ পরিবর্তন বা নতুন জন্ম নিবন্ধন সনদ করে জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন করা যাবে না। জন্ম নিবন্ধনটি অবশ্যই ভোটার নিবন্ধনের পূর্বে প্রণীত হতে হবে।
- কারও ২টি জন্ম নিবন্ধন করা হলে সেক্ষেত্রে যেটি আগে করা হয়েছিল সেটিই মূল ও আসল জন্ম নিবন্ধন (jonmo nibondhon) বিবেচিত হবে। তাই কেউ ২য় বার জন্ম নিবন্ধন করা থেকে বিরত থাকবেন।
FAQs
প্রশ্নঃ একটি কার্ড কতবার সংশোধন করা যায়?
উত্তরঃ এক তথ্য শুধুমাত্র একবার সংশোধন করা যাবে। তবে, ঠিকানা, স্বামীর নাম, স্ত্রীর নাম এবং রক্তের গ্রুপ একাধিকবার সংশোধন করা যায়। তবে যুক্তিযুক্ত না হলে কোন সংশোধন গ্রহণযোগ্য হবে না।
প্রশ্নঃ ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কত টাকা লাগে?
উত্তরঃ ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে ভ্যাটসহ ২৩০ টাকা লাগে। তাছাড়া ২য় বার নাম সংশোধন আবেদন করতে এই ফি ৩৪৫ টাকা এবং ৩য় বার সংশোধন করতে ৫৭৫ টাকা লাগে।
প্রশ্নঃ আইডি কার্ডের নাম সংশোধন (NID Name Correction) করতে কতদিন সময় লাগে?
উত্তরঃ ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধন করতে ৫ দিন থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ দিন লাগে। নামের বানান ও আংশিক পরিবর্তন একটি “ক” শ্রেণির আবেদন এটি অনুমোদন হতে ৭ থেকে ১৫ দিন লাগতে পারে। আর, নামের সম্পূর্ণ পরিবর্তন একটি “গ” শ্রেণির আবেদন এটি অনুমোদন হতে ৩০ থেকে ৪৫ দিন লাগতে পারে।
প্রশ্নঃ আমার আইডি কার্ড এর ছবি অস্পষ্ট, ছবি পরিবর্তন করতে হলে কি করা দরকার?
উত্তরঃ এক্ষেত্রে নিজে সরাসরি উপস্থিত হয়ে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে আবেদন করতে হবে।
ক্যাটাগরি | জাতীয় পরিচয় পত্র |
নতুন ভোটার হতে চান | NID Application |
জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড | NID Card Download |
NID কার্ড চেক | NID Card Check |
জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন | NID Card Correction |
হোমপেইজ | Govt BD |
Leave a Comment